আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবিরে শিক্ষার্থীরা হামলা চালিয়েছে। মিয়ানমার থেকে আসা শত শত রোহিঙ্গা শরণার্থীকে ফেরত পাঠানোর দাবিতে ইন্দোনেশিয়ার একটি আশ্রয় শিবিরে হামলা চালিয়েছে দেশটির শত শত শিক্ষার্থী। বুধবার ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এই বিষয়ে বান্দা আচেহ পুলিশের একজন মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, হামলাকারী শিক্ষার্থীদের অনেকেই সবুজ জ্যাকেট পরা। তারা ভবনের বেজমেন্টের দিকে ছুটে যান; যেখানে রোহিঙ্গা পুরুষ, নারী ও শিশুরা বসে ছিল। হামলাকারীদের ভয়ে রোহিঙ্গাদের কান্নাকাটি করতে দেখা যায়।পরে সেখানকার কর্তৃপক্ষ আশ্রয় শিবির থেকে রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেয়। এ সময় কেউ কেউ তাদের জিনিসপত্র প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে ট্রাকে করে বিকল্প আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যান।
বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা প্রায়ই নৌকায় চেপে মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ডসহ এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন। সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে রোহিঙ্গাবিরোধী মনোভাব তীব্র আকার ধারণ করেছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের দাবিতে দেশটিতে বিভিন্ন সময়ে বিক্ষোভও করেছেন সাধারণ মানুষ। ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদো দেশটিতে সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা ঢলের জন্য মানবপাচারের ঘটনাকে দায়ী করেছেন। এছাড়া সংখ্যালঘু এই গোষ্ঠীর সদস্যদের অস্থায়ী আশ্রয় দেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সাথে কাজ করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন তিনি।
সাধারণত নভেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ায় রোহিঙ্গাদের পৌঁছানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। কারণ ওই সময় সমুদ্র তুলনামূলক শান্ত থাকায় রোহিঙ্গারা নৌকায় করে প্রতিবেশী থাইল্যান্ড এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় যান।
বান্দা আচেহর ২৩ বছর বয়সী ছাত্রী ওয়ারিজা আনিস মুনান্দার বুধবার সকালের দিকে শহরটিতে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি ইন্দোনেশিয়া থেকে রোহিঙ্গাদের বিতাড়নের আহ্বান জানান। ২০ বছর বয়সী ডেলা মাসরিদা নামের অপর এক শিক্ষার্থী বলেন, তারা (রোহিঙ্গারা) এখানে বিনা আমন্ত্রণে এসেছে। তারা মনে করে এটা তাদের দেশ।
বুধবার আচেহ প্রদেশে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে হামলার বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআরের একজন মুখপাত্র তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। চলতি মাসের শুরুর দিকে ইউএনএইচসিআর জানায়, ইন্দোনেশিয়ায় রোহিঙ্গাদের প্রত্যাখ্যানের খবরে তারা শঙ্কিত।
ইন্দোনেশিয়া ১৯৫১ সালের জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। তবে দেশটিতে শরণার্থীরা পৌঁছালে তাদের আশ্রয় দেওয়ার ইতিহাস রয়েছে।
Leave a Reply