স্পোর্টস ডেস্ক : উইন্ডিজরা দীর্ঘ ২৫ বছর পর ইংল্যান্ডকে ঘরের মাঠে সিরিজ হারিয়েছে। একইসঙ্গে যেকোনো মাঠে ১৬ বছর পর সিরিজ জয় পেল শাই হোপের দল। তিন ম্যাচের এই ওয়ানডে সিরিজে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়েছে দুই দলের। জয় দিয়ে ক্যারিবীয়রা সিরিজ শুরুর পর দ্বিতীয় ম্যাচে জস বাটলাররা সমতায় ফিরেছিলেন। তৃতীয় ম্যাচে কাল (শনিবার) ৪ উইকেটের জয়ে ২-১ ব্যবধানে ওয়ানডে সিরিজ নিশ্চিত করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ব্রিজটাউনে বৃষ্টিরও দাপট ছিল এদিন। দুই ঘণ্টা দেরিতে শুরু হওয়া ম্যাচে ৪০ ওভারে ৯ উইকেটে ২০৬ রান করে ইংল্যান্ড। আরেক দফা বৃষ্টির বাধায় উইন্ডিজের জন্য লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৪ ওভারে ১৮৮। যা তারা ৬ উইকেট হারিয়ে তুলে নিয়েছে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ড দুই দলের জন্যই দ্বিপক্ষীয় ওয়ানডে সিরিজটি ছিল নিজেদের খুঁজে পাওয়ার মিশন। ক্যারিবীয়রা বাজে পারফরম্যান্সের কারণে সর্বশেষ বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায়নি। আর ইংল্যান্ড বিশ্বচ্যাম্পিয়ন তকমা নিয়ে গিয়ে ৯ ম্যাচের মাত্র তিনটিতে জিতেছে। তাই উভয় দলের জন্য ছিল এটি নতুন শুরুর লড়াই।
বেরসিক বৃষ্টির কারণে নির্ধারিত সময়ের দুই ঘণ্টার পর সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচটি মাঠে গড়ায়। এরপর ম্যাচ শুরু হলেও গণ্ডি কমিয়ে আনা হয় ৪০ ওভারে। আগে ব্যাট করতে নামা ইংলিশরা শুরু থেকেই ছিল ব্যাকফুটে। দলীয় ৪ রানে ফিল সল্টের বিদায়ের পর, ৮ রানে জ্যাক ক্রাউলিকেও হারায় সফরকারীরা। দুটি উইকেটই নিয়েছেন ম্যাথু ফর্ড। শুরুতেই খাদে পড়ে যাওয়া দলটিকে টেনে তোলার লড়াই চালান উইল জ্যাকস ও বেন ডাকেট। কিন্তু তাদের জুটি ৩৭ রানে থামে জ্যাকসের বিদায়ে। এবারও ফর্ডের আঘাত, জ্যাক ফেরেন মাত্র ১৭ রানে। এরপর চার রানের ব্যবধানে আরও দুই উইকেট হারালে ইংল্যান্ড অল্পতেই গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় পড়ে যায়। হ্যারি ব্রুক ও অধিনায়ক জস বাটলার দুজনেই ফিরেছেন যথাক্রমে ০ ও ১ রানে। তখনও একপ্রান্তে অটল ছিলেন ডাকেট। তার সঙ্গে লোয়ার মিডলে নামা লিয়াম লিভিংস্টোন দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন। তাদের ৮৮ রানের জুটির সৌজন্যে ইংলিশরাও লড়াইয়ের পুঁজি পেয়ে যায়। ৭৩ বলে ৬টি চার ও একটি ছয়ের বাউন্ডারিতে ডাকেট ৭১ এবং দুটি করে চার-ছক্কায় ৫৬ বলে ৪৫ রান করেন লিভিংস্টোন। ক্যারিবীয়দের হয়ে আলজারি জোসেফ ও ফর্ড সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট শিকার করেন। ২ উইকেট নেন রোমারিও শেফার্ড। এরপর ম্যাচ পণ্ড করে দেওয়ার দ্বিতীয় চেষ্টা চালায় বৃষ্টি। এক সময় এই দাপট থামলে ম্যাচের গণ্ডি ফের কমিয়ে আনা হয় ৩৪ ওভারে, ক্যারিবীয়দের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৮৮ রানের। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে স্বাগতিকরাও শুরুতেই বিপদে পড়ে যায়। দলীয় ২ রানের সময় ১ রান করে আউট হন ব্র্যান্ডন কিং। সেখান থেকে কেসি কার্টির সঙ্গে দুর্দান্ত ৭৭ রানের জুটি গড়েন আরেক ওপেনার অ্যালিস অ্যাথানাজ। ব্যক্তিগত ৪৫ রানে অ্যাথানাজ আউট হলে বিপদে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একের পর এক উইকেট হারিয়ে এক সময় ৬ উইকেটে ক্যারিবিয়ানদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ১৩৫ রান।৫৮ বলে ৫০ রানে থামেন কার্টি। তখনও দলের জয় ছিল অনিশ্চয়তায়। সেখান থেকে ক্যারিবীয়দের দারুণ জয় এনে দেন অলরাউন্ডার রোমারিও শেফার্ড ও ম্যাথু ফর্ড। শেফার্ড ৪১ ও ফোর্ড ১৩ রানে অপরাজিত থাকাবস্থায় জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় স্বাগতিকরা। ব্যাটিংয়ের ২৯ রানে ৩ উইকেট নেওয়ায় ম্যাচসেরা হয়েছেন ফর্ডে। ১৯২ রান করে সিরিজসেরা হয়েছেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক হোপ।
ইংল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট পেয়েছেন উইল জ্যাকস। এছাড়া গাস অ্যাটকিনসন ২টি এবং রেহান আহমেদ একটি শিকার করেন। ওয়ানডে সিরিজ শেষে দু’দল টি-টোয়েন্টি লড়াইয়ে নামবে। পাঁচ ম্যাচের এই টি-টোয়েন্টি সিরিজ শুরু হবে ১২ ডিসেম্বর থেকে।
Leave a Reply