স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশনের সঙ্গে সৌজন্য সভা করেছে বিশ্ব জিমন্যাস্টিক্সের শীর্ষ কর্তারা। শুক্রবার বিকেলে সভার আগে বাংলাদেশের জিমন্যাস্টিক্সের প্রধান ভেন্যু জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের জিমনিশিয়াম দেখেছেন বিদেশি কর্তারা। সেই ভেন্যুতে বাংলাদেশি জিমন্যাস্টদের কসরতও দেখেছেন। সেই কসরত দেখে বেশ উচ্চাশাই প্রকাশ করেছেন বিশ্ব জিমন্যাস্টিক্সের সভাপতি মরিনারি ওয়াতানাবে, বাংলাদেশে মেধাবী জিমন্যাস্ট রয়েছে। কোরিয়ান কোচও খুব দক্ষ। বাংলাদেশকে ২০২৮ অলিম্পিককে লক্ষ্য করে এগিয়ে যেতে হবে। বাংলাদেশে ক্রীড়াজগতে ফুটবল-ক্রিকেটের উন্মাদনাই সবসময় বেশি। তবে এসবের বাইরেও বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে নাম দখল করে আছে আরও অনেক খেলা। যাদের মাঝে বিশেষ অবস্থান রয়েছে জিমন্যাস্টিক্সের। ছন্দ ও কৌশলের এই খেলা বিশ্ব জুড়ে সমাদৃত। বিশ্ব জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশনের নিবার্হী সভা ২২-২৩ নভেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
২০১২ সালে লন্ডন অলিম্পিকে আমেরিকান প্রবাসী সাইক সিজার বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। সেটা ছিল ওয়াইল্ড কার্ডে। অলিম্পিকে কোটা নির্ধারণ করা বেশ কষ্টাসাধ্য। সেটাও স্মরণ করিয়ে বিশ্ব জিমন্যাস্টিক্সের সভাপতি বলেন, সাফল্যের কোনো সংক্ষিপ্ত রাস্তা নেই। পরিকল্পনা করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী চেষ্টার বিকল্প নেই সাফল্যের জন্য।বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশনের সভাপতি শেখ বশির আহমেদ মামুনও সেটা মানলেন, আসলেই সফলতা পেতে হলে অবশ্যই কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আমরা ইতোমধ্যে তরুণ মেধাবী জিমন্যাস্ট পেয়েছি। যারা চার বছর পর আরো পরিপক্ব হবে। আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য ২০২৬ এশিয়ান জিমন্যাস্টিক্স এরপর ২০২৮ অলিম্পিক। বাংলাদেশের জিমন্যাস্টিক্সে অন্যতম সমস্যা ভেন্যু। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের ছোট্ট পরিসরেই অনুশীলন করতে হয় জিমন্যাস্টদের। বাংলাদেশের জিমন্যাস্টিক্স উন্নয়নে সরকারকে এগিয়ে আসার অনুরোধই জানালেন বিশ্ব জিমন্যাস্ট ফেডারেশনের সভাপতি, অবকাঠামো উন্নয়নে আমরা ভূমিকা রাখতে পারি না। এটা সম্পূর্ণ সরকারে বিষয়। সরকার যদি অবকাঠামো তৈরি করে দেয় তখন আমরা সরঞ্জামাদি ও ট্যাকনিক্যাল সাপোর্ট প্রদান করতে পারি।বিশ্ব জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশনের সভাপতি বাংলাদেশে সম্ভাবনা ও আশার কথা শোনালেও তার তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেননি। তবে বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশনের সভাপতি শেখ বশির আহমেদ মামুন অবশ্য আশাবাদী, আজকের সভায় এফআইজি (বিশ্ব জিমন্যাস্ট ফেডারেশন) সহ মহাদেশীয় কয়েকজন সভাপতির সঙ্গে ভালো আলোচনা হয়েছে। তারা আমাদের নানা ভাবে সহায়তা করার আশ্বাস দিয়েছেন। কেউ তাদের দেশে ট্রেনিং করার কথা জানিয়েছে আবার কেউ সরঞ্জামাদি দিতে চেয়েছেন। আমরা সামনে আলোচনা করে এটি বাস্তবায়ন করব। আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশের ১১ জন জিমন্যাস্ট ও ২ জন কোচ দক্ষিণ কোরিয়ায় যাচ্ছে তিন সপ্তাহের অনুশীলনের জন্য। যাতায়াত ও সেখানের আবাসন আনুষাঙ্গিক সকল ব্যয় কোরিয়াই বহন করবে।জিমন্যাস্টিক্স উন্নয়নে এই খেলার সংস্কৃতি আগে গড়ে তোলা প্রয়োজন। তাই জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করেছে, আগে স্কুলগুলোতে জিমন্যাস্ট করার সুযোগ ছিল। এখন অনেক স্কুলেই নেই। আমরা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করেছি স্কুলগুলোতে জিমন্যাস্ট সুবিধা প্রদান করা হোক। আমরাও অনেক স্কুলে প্রয়োজনে সরঞ্জামাদি দেব। এতে বাচ্চারা খেলায় আগ্রহী হবে, বলেন সভাপতি।
বিশ্ব জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশনের নির্বাহী সভা সাধারণত সভার সদস্য দেশগুলোর মধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়। এবারই প্রথম কমিটির সদস্য’র বাইরের দেশে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশনের আয়োজনের প্রশংসাও করেছেন বিশ্ব জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশনের সভাপতি, বাংলাদেশ জিমন্যাস্টিক্স ফেডারেশন খুব সুন্দরভাবে এই সভা আয়োজনের কাজ সম্পন্ন করেছে। আমরা খুবই খুশি তাদের এই আগ্রহ এবং ব্যবস্থাপনায়। বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক বেশ নিবিড় এবং বাংলাদেশ জিমন্যাস্ট্সি উন্নয়নে আমরা অনেক আলোচনা করেছি।
২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এককভাবে আয়োজন করেছিল বাংলাদেশ। সেই সময় আইসিসি’র নির্বাহী সভা ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল। প্রায় এক দশক পর আরেকটি আন্তর্জাতিক ফেডারেশনের নির্বাহী সভা অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ। খেলার বিশ্বায়ন ও কমিটির সদস্য দেশের অর্ন্তভূক্তিতে ক্রিকেটের চেয়ে অনেক এগিয়ে জিমন্যাস্টিক্সের সভা।
Leave a Reply